মেজর ডালিম বাংলাদেশের ইতিহাসের না বলা সত্যকে জানুন

 

 

 
 
..ডালিম বলছি
..যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি
..জীবন বৃত্তান্ত
..সমসাময়িক ভাবনা
..প্রকাশিত বইসমগ্র
..কিছু কথা কিছু ব্যাথা
..ইংরেজী ভার্সন    
 

আসন্ন বিপর্যয় মোকাবেলার রাজনৈতিক প্রচেষ্টায় সেনা পরিষদ

 
   
 

 

বিপর্যয় ঠেকাবার জন্য সব মহলের কাছ থেকেই রাজনৈতিক সহযোগিতা ও সমর্থন আদায় করার আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়।

আসন্ন বিপর্যয়ের মোকাবেলা করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করছিল সেনা পরিষদ। অনেক ভেবেচিন্তে ঠিক করলাম; যেকোন প্রতিবিপ্লবের মোকাবেলা করার জন্য বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জাতীয়তাবাদী এবং দেশপ্রেমিক সব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করা উচিত। আলোচনা হল সাম্যবাদী দলের নেতা তোহা ভাই, সর্বহারা পার্টির মাহবুব, জাসদের মেজর জলিল এবং গণবাহিনীর নেতা কর্নেল তাহেরের সাথে।

সোভিয়েত-ভারত মদদপুষ্ট যেকোন প্রতিবিপ্লবী চক্রান্তের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ব্যাপারে একমত হয়েছিলেন সবাই। সব কিছু জানার পর কর্নেল তাহের বলেছিলেন, “এই মুহুর্তে জেনারেল জিয়ার বিরোধিতা করা দেশদ্রোহিতারই সমান। কারণ, বর্তমান অবস্থায় সেনাবাহিনীর পুর্নঃগঠন এবং  ঐক্যের প্রয়োজনে জেনারেল জিয়ার কোন বিকল্প নাই। তাছাড়া যেকোন বৈদেশিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে তোলার জন্য জিয়ার ভাবমুর্তি, ব্যক্তিত্ব এবং ভাবমুর্তিও বিশেষভাবে প্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে। তাই জিয়াকে আমাদের যে করেই হোক না কেন; বাঁচিয়ে রাখতে হবে বিপ্লবের স্বার্থে, জাতীয় স্বার্থে। তিনি দ্ব্যার্থহীনভাবে আরো বলেছিলেন, “অবশেষে খালেদ যদি সত্যিই জেনারেল জিয়ার বিরুদ্ধে কোন প্রতিবিপ্লবী পদক্ষেপ গ্রহণ করে তবে তার নেতৃত্বাধীন গণবাহিনী সেনা পরিষদের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে সেই চক্রান্তের বিরোধিতা করবে। আবার আমরা শুরু করব সমাজ পরিবর্তনের অসমাপ্ত বিপ্লব। বিদেশী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরোধ গড়ে তোলার স্বার্থে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করতে হবে অন্যান্য সব জাতীয়তাবাদী এবং প্রগতিশীল দলগুলোর সাথে।” এ ব্যাপারে আমাদের বিভিন্ন মহলের সাথে আলোচনার কথা শুনে তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন। সেদিন আমাদের আলাপ হচ্ছিল পুরনো বন্ধুত্বের পরিপ্রেক্ষিতে। একান্ত বিশ্বাস এবং নির্ভরশীলতার সাথে আলোচনা করেছিলাম আমরা। সেদিন কোন বিশেষ দলের নেতা হিসাবে কথা বলছিলেন না কর্নেল তাহের। তার অঙ্গীকারে খুঁজে পেয়েছিলাম নিষ্কলুশ-নিবেদিত প্রাণ, দেশপ্রেমিক একজন সাচ্চা মুক্তিযোদ্ধার আন্তরিক উৎকন্ঠা। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে একদিন কোয়েটা থেকে একত্রে পালিয়ে আসার পরিকল্পনা প্রণয়নে নিঃস্বার্থ দেশপ্রেম আমাদের অনুপ্রাণিত করেছিল সেই একই অনুপ্রেরণায় আজ আবার জাতির এক মহা ক্রান্তিলগ্নে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ হলাম জাতীয় স্বার্থ বিরোধী যেকোন চক্রান্তের মোকাবেলা করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। রাজনৈতিক দর্শন এবং লক্ষ্য হাসিলের পদ্ধতিতে আমাদের মাঝে কোন কোন ক্ষেত্রে মতবিরোধ থাকলেও সেটা দেশ ও জাতীয় স্বার্থের উর্ধ্বে নয়। সে প্রশ্নে আমরা এক ও অভিন্ন। সিদ্ধান্ত নেয়া হল, যেকোন হুমকির মোকাবেলা করার জন্য সেনা পরিষদ এবং গণবাহিনীকে যৌথভাবে প্রস্তুত করে তুলতে হবে অতি সতর্কতার সাথে। কর্নেল তাহের এবং আমাদের মাঝে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের বন্দোবস্ত করা হল।

 
 
 
     
     
  Design & Developed By: Hemu
All Rights Reserved 2008 @www.majordalimbangla.net