মেজর ডালিম বাংলাদেশের ইতিহাসের না বলা সত্যকে জানুন

 

 

 
 
..ডালিম বলছি
..যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি
..জীবন বৃত্তান্ত
..সমসাময়িক ভাবনা
..প্রকাশিত বইসমগ্র
..কিছু কথা কিছু ব্যাথা
..ইংরেজী ভার্সন    
 

খন্দোকার মোশতাক আহমদ সম্পর্কে সেনা পরিষদের মূল্যায়ন

 
   
 

 

খন্দোকার মোশতাক আহমদ ছিলেন রাজনৈতিক বিচক্ষণতার অধিকারী। বর্ষিয়ান এই রাজনীতিবিদ যুদ্ধকালীন অবস্থাতেই আমাদের নজরে পড়েন। রুশ-ভারত আধিপত্যবাদের ঘোর বিরোধী ছিলেন তিনি।

আমরা খন্দোকার মোশতাককে ’৭১ এর সংগ্রামকাল থেকে দেখে আসছি। তিনি ছিলেন ঘোর রুশ-ভারত বিরোধী। ধর্মপ্রাণ প্রবীণ নেতা খন্দোকার মোশতাক ছিলেন নীতির প্রশ্নে আপোষহীন। একজন সাচ্চা গণতান্ত্রিক এবং উদারপন্থী রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি দেশে-বিদেশে পরিচিত ছিলেন। আলাপ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের অনেকেই খন্দোকার মোশতাকের ক্ষুরধার বুদ্ধিমত্তা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার প্রশংসা করে অভিমত পর্যন্ত ব্যক্ত করেছেন যে, নেতৃত্বের যোগ্যতার বিচারে খন্দোকার মোশতাকের স্থান শেখ মুজিবর রহমানেরও উপরে। তাদের এ ধরণের মনোভাব থেকে আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, খন্দোকার মোশতাকের নেতৃত্বে সরকার গঠন করা হলে তারা অতি সহজেই তার নেতৃত্ব মেনে নিয়ে বিপ্লবের পক্ষে স্বতঃস্ফুর্ত সমর্থন জানাবেন। ফলে আওয়ামী বাকশালীদের বৃহৎ অংশকে শুধু যে নিউট্রালাইজ করাই সম্ভব হবে তা নয়; এতে করে বাকশালী যোগসাজসে ভারতীয় সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনাও অনেকাংশে কমে যাবে। আওয়ামী-বাকশালী নেতাদের সমর্থন পেলে রক্ষীবাহিনীকে নিরস্ত্র করার কাজটিও সহজ হয়ে যেতে পারে। তার আত্মবিশ্বাস ছিল প্রচন্ড। তিনি যে একজন রাজনীতিবিদ হিসাবে বিচক্ষণ ও তীক্ষ্ম বুদ্ধির অধিকারী ছিলেন তা নয়; তার পান্ডিত্যের গন্ডিও ছিল বিস্তৃত। রসিক এবং মিতভাসী জনাব মোশতাকের উপস্থিত বুদ্ধি ছিল চমকপ্রদ। নীতি ও নিখাদ দেশপ্রেমের পরিচয় দিয়েছিলেন জনাব মোশতাক সেচ ও পানি সম্পদ মন্ত্রী হিসাবে। ভারতীয় পক্ষের সব চাপকে উপেক্ষা করে তিনি বাংলাদেশের স্বার্থের ব্যাপারে কোন ছাড় না দিয়ে অটল থাকেন; ফলে তাকে খেসারত হিসাবে মন্ত্রীত্ব হারাতে হয়। শেখ মুজিব তাকে ঐ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেন।

এছাড়া পশ্চিমা বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলো এবং মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামিক রাষ্ট্রসমূহের ক্ষমতাবলয়ে একজন ধর্মপ্রাণ, উদারপন্থী, গণতন্ত্রীমনা রাজনীতিবিদ হিসেবে খন্দোকার মোশতাকের একটা ইতিবাচক গ্রহণযোগ্যতাও ছিল। এ সমস্ত দেশের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দের অনেকের সাথেই তিনি ব্যক্তিগত পর্যায়ে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। এই অবস্থায় খন্দোকার মোশতাক আহমদকে সরকারের রাষ্ট্রপতি বানালে পশ্চিমা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহ এবং মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর স্বীকৃতি ও সমর্থন আমরা সহজেই পেতে পারব। তাছাড়া রাজনৈতিক নেতৃত্বের অধিনে বেসামরিক সরকার গঠন করলে আমরা দেশে-বিদেশে এটাও প্রমাণ করতে পারব যে, বাংলাদেশের বৈপ্লবিক অভ্যূত্থান ঘটেছে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে। স্বৈরশাসন ও রুশ-ভারতের নাগপাশ থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করার জন্য, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। বিস্তারিত বিশ্লেষনের পরই খন্দোকার মোশতাক আহমদকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

 

 
 
 
     
     
  Design & Developed By: Hemu
All Rights Reserved 2008 @www.majordalimbangla.net